Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
রাখাইন পাড়া
স্থান
খুরুশকুল ইউনিয়ন পরিষদ হতে ২ কিলোমিটার ও সদর উপজেলা পরিষদ হতে ৯ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত এই রাখাইন পল্লী।
কিভাবে যাওয়া যায়
সি.এন.জি.ও রিক্সা নিয়ে যাওয়া যায়।
বিস্তারিত

 

খুরুশ্কুলের রাখাইন সম্প্রদায় ও ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দিপনার মধ্য দিয়ে তাদের ধর্মীয় ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান পালন করে থাকে। রাখাইনদের সামাজিক জীবন বৌদ্ধ ধর্মের ভিত্তির উপরেই প্রতিষ্ঠিত। সে মতে তারা বৌদ্ধ ধর্মের সব ক’টা অনুষ্ঠান পালন করেন। ‘কাছং ইয়াংরী ছিয়াম’ নামক অনুষ্ঠানটি হয় বৈশাখ মাসের পূর্ণ চন্দ্র দিবসে। বৌদ্ধদের নিকট এই দিনটি অত্যন্ত পবিত্র। এর পর রয়েছে আষাঢ়ী পূর্ণিমা ও আশ্বিণী পূর্ণিমা। কার্যতঃ চৈত্র সংক্রান্তি চৈত্রের শেষ দিবস এবং বৈশাখের প্রথম দিবস রাখাইনদের খুবই আনন্দের দিন। তাদের ‘ওয়াগেপোয়ে’ নামে আরেকটি পূঁজা হয়ে থাকে প্রতি বৎসর নভেম্বর মাসে। তবে রাখাইনদের সবচেয়ে আকর্ষণীয় অনুষ্ঠান সাংগ্রেং বা পানি খেলা। প্রতি বৎসর নববর্ষ উপলক্ষ্যে তারা আয়োজন করে থাকে তাদের বৃহত্তম সামাজিক উৎসব সাংগ্রেং বা পানি খেলা। মঘী সনের প্রথম মাসের নাম টেঙ্খু। টেঙ্খুর প্রথম দিন থেকে তিন  দিনব্যাপী নারী- পুরুষ বিশেষ করে কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীরা মেতে উঠে অনাবিল এক আনন্দ উৎসবে। মঘী বৎসরের শেষ মাসের নাম তাবং। তাবং কবে শেষ হবে টেঙ্খু কবে আসবে তাই নিয়ে উদগ্রীব থাকে রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকজন। রাখাইন কিশোর-কিশোরী ও যুবক-যুবতীদের শান্তির বর্ণির্ল শোভা-যাত্রার মাধ্যমে এবং বৌদ্ধ মূর্তিকে পবিত্র সুগন্ধি পানি দিয়ে গোসল করানোর পর শুভ সূচনা করা হয় সাংগ্রেং অনুষ্ঠানের।

 

সাংগ্রেং উপলক্ষে রাখাইন অধ্যুষিত এলাকায় নির্মাণ করা হয় মন্ডপ বা প্যান্ডেল। মন্ডপগুলো রকমারি ফুল, বাহারি পাতা, রঙিন কাগজ এবং বর্ণিল বেলুনে সুসজ্জিত করে তোলা হয়। মন্ডপের পাশে রাখা হয় পানি ভর্তি ড্রাম। রাখাইন তরুনী এবং যুবতীরা ঐতিহ্যবাহী পোষাক পরে সেজেগুজে পানির ‘মগ’ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। অপর দিকে রাখাইন তরুণ এবং যুবকরাও নতুন পোষাক পরে দল বেঁধে মন্ডপে আসে এবং অপেক্ষমান মেয়েদের দিকে পানি ছুঁড়ে মারে। মেয়েরাও ছেলেদের দিকে পানি ছুঁড়ে জবাব দেয়। এই পানি ছুড়াছুড়ির মধ্যে চলতে থাকে নানা রকম গান-বাজনা ও নাচ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলতে থাকে পানি খেলা।

 

কেউ কেউ এই উৎসবকে পাত্র-পাত্রী কিংবা জীবন সঙ্গী নির্বাচনের উপলক্ষ বলে ধারণা করে থাকেন। প্রবীণরা যদিও সরাসরি পানি খেলায় অংশগ্রহণ করেনা, তবে তাঁরা যুবক-যুবতীদের সহায়তা করে থাকেন। ঠিক কবে থেকে সাংগ্রেং বা পানি খেলা উৎসব শুরু হয়েছিল তার কোন সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। সাংগ্রেংকে উপলক্ষ করে রাখাইনরা প্রিয়জনদের প্রদান করে থাকে নানা উপহার সামগ্রী। পানি খেলা শেষে রাখাইনরা বিগত বছরের সকল পাপ পংকিলতা ধুয়ে মুছে পবিত্র হয় এবং নতুন বছরকে স্বাগত জানায়। রাখাইনদের পানি খেলার উৎসব জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলে উপভোগ করে থাকেন।

 

সাংগ্রেং উপলক্ষে রাখাইন সম্প্রদায়ের মহল্লায় মহল্লায় ধ্বনিত হয় জনপ্রিয় একটি সংগীত উক্ত সংগীতটি নিম্নে তুলে ধরা হলো:

 

লেঃ লেঃ.....................লেঃ লেঃ

মংরো মংরো................মংরো মংরো

পেং পাদাউশে পোওয়ারে লা,

সাংগ্রেং ক্যালোঃ মংরো প্যারে।

 

মেরীশে আহলা পাঃ

মেংডেৎ থেকা চাউংলো ক্রোরে

সাংগ্রেং রি ঈরে ঈরে

মেরীশে হ্লারে হ্লারে।

রোঃ রা গো থিং ছিং কেৎ পা

চাইংলা গো ম্রেঃ নোঃ গেঃ পা।

রোঃ রা হিমা য়াইং ক্যেঃ বা রে

চাইংলা হিমা লুম্যোঃ হেংরে।

 

বাংলা অনুবাদঃ

 লে: লে:....................................লে:  লে:

মংরো মংরো .................... মংরো মংরো

রাঙা পুষ্প শোভিত এ মাসে

সাংগ্রেং এর আনন্দে সবাই, ভাসে।

 

এ শুভ দিনে তুমি তুলনাহীন

নীল জলে স্বাগত, বাজাও বীণ;

সাংগ্রেং এর জল হিমশীতল

সুন্দরী তুমি অপূর্ব, উচ্ছল।

 

কৃষ্টিকে কররিা লালন

ঐতিহ্যকে রাখো ধারণ;

কৃষ্টিতেই সভ্যতার পরিচয়

ঐতিহ্যেই জাতির বিজয়।